নগরীর খুলশী থানার ষোলশহরে দুই যুবককে নৃশংসভাবে খুনের আড়াই বছর পর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরা হল, রমজান আলী প্রকাশ আকাশ প্রকাশ তুফান (২৫) এবং মো.আলাউদ্দিন (২১)।
চাঞ্চল্যকর ওই মামলায় ৯ জনকে আসামি করে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছিল খুলশী থানা পুলিশ। তবে নাম-ঠিকানা না পাওয়ার অজুহাতে রমজান ও আলাউদ্দিনের নাম অভিযোগপত্রে অর্ন্তভুক্ত করেনি পুলিশ।
আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্তে নেমে পিবিআই রোববার (৩০ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে রমজান ও আলাউদ্দিনকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
অভিযানে থাকা পিবিআই, চট্টগ্রামের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, হত্যাকান্ডের পর থানায় যে মামলা হয়েছিল তাতে রমজান ও আলাউদ্দিনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ ছিল। খুলশী থানা পুলিশ তদন্ত করে হত্যাকান্ডের সঙ্গে ১২ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পায়। এর মধ্যে ৯ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহে সক্ষম হয় পুলিশ। তাদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
অভিযোগপত্রে নাম-ঠিকানার জন্য বাদ পড়া তিনজনের দুজন আলাউদ্দিন ও রমজান বলে জানান পরিদর্শক সন্তোষ।
২০১৪ সালের ১৭ মার্চ সকালে নগরীর খুলশী থানার ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই বন্ধুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরা হল, মো.ফোরকান উদ্দিন (২০) ও কামরুল ইসলাম (২০)।
কামরুল ও ফোরকান দুজন বন্ধু ছিল। উভয়ই স্থানীয় ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। কামরুল ওই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। আর ফোরকান সিইপিজেডে একটি কারখানার শ্রমিক ছিল। সে নাসিরাবাদ এলাকায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক ছাত্র।
মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের হাত-পা বেঁধে, পায়ের রগ কেটে এবং শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনায় কামরুল ইসলামের বাবা আব্দুল হাকিম বাদি হয়ে ৯ জনকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় খুলশী থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেছিলেন। আসামিরা হল, বাঁছা প্রকাশ সুন্দরলাল বাঁছা প্রকাশ ব্লেট বাঁছা, সাহেদ, শাহআলম, জীবন প্রকাশ কাশেম, জাহাঙ্গীর, লেদু, ভুট্টু, আকাশ এবং বাহার।
পরবর্তীতে খুলশী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারভুক্ত ৭ জনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়ে জানিয়েছিলেন, ছিনতাইয়ের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কামরুল ও ফোরকানকে খুন করা হয়।
আদালত ওই অভিযোগপত্র প্রত্যাখান করে চলতি বছরের ২৪মে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
পাঠকের মতামত: